KiHobe Latest Questions

RJ Emon
  • 0

ভূত গল্প – ৬

  • 0

Leave an answer

You must login to add an answer.

1 Answer

  1. ভূত গল্প-৬  

    আমি এই ঘটনাটি অনলাইন ম্যাগাজিন  আজব গুজব.কম ওয়েব সাইটের মাধ্যমে আপনাদের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছি ।ধন্যবাদ  আমাকে এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

    আমি আমার নাম বলতে চাইনা।

    আমি সরাসরি আমার ঘটনায় চলে যাচ্ছি।  আমরা সবাই  খালার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম । খালু ঐখানে নতুন একটা বাসা ভাড়া নেন আর আমাদের বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেন।  তাই আমরা সবাই বেড়াতে গিয়েছিলাম।

    ঐ দিন সবাই চলে আসেন কিন্তুু আমি এবং নানু ঐখানে থেকে যাই। প্রথম দিন রাতে আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। আমি আর নানু এক রুমে একই বিছানায় ঘুমাই।  কিন্তুু রাতে অন্ধকার রুমের মধ্যে এক অদ্ভুদ অনুভুতি মনে হলো।  লাইট অফ করার পর মনে হল কেউ যেন আমাদের পাশে আছে।  কিন্তুু টায়ার্ড থাকায় কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়ি।

    রাতে হঠাৎ করে আমি চিৎকার করে ঘুম থেকে উঠি। নানু বললেন কি হয়েছে আমি কিছু বলতে পারছিলাম না।  নানুকে বললাম হঠাৎ ভঁয় পেয়ে উঠেছি । তারপর নানু আমাকে পানির গ্লাস হাতে দিলেন পানি খেয়ে আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। এর কিছুক্ষণ পর যে ঘটনাটি ঘটলো সেটি হচ্ছে আমার নানু চিৎকার করে উঠেন।

    আমি দৌড়ে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে নানু ?  তিনি বললেন অদ্ভুদ ধরনের একটি স্বপ্ন দেখালাম।  আমরা ঘুমানোর সময় ঠিক দিকেই ঘুমাই কিন্তুু পরে দেখি আমরা উল্টোদিকে শুয়ে আছি। আর কে যেন ভারি গলায় বলছে চলে যা এখান থেকে।  তারপর নানুর হাতে কি যেন একটা উঠছে।  তিনি হাত দিয়ে সেটাকে ফেলে দেন সেটা ছিঁটকে পড়ে গিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় তারপর নানু চিৎকার দিয়ে উঠেন।

    তারপর আমরা আর ঘুমাইনি সারা রাত লাইট জ্বালিয়ে রেখেছিলাম।  সকালে এই বিষয়টি খালা এবং খালুকে বললাম।  উনারা শুনে বললেন কই আমরাতো কয়েকদিন ধরে এই বাসায় আছি আমাদের সাথে কখনও এরকম হয়নি। তাই আমি ভাবলাম হয়তো আমাদের মনের ভুল। বিল্ডিংটা ছিল বিশাল বড়, দেখতে অনেকটা পুরনো ভূতুরে বাড়ীর মতো।

    বাড়ীর ঠিক সামনেই ছিল একটি কবরস্থান। আমি ঘরের মধ্যে হাটাহাটি করছিলাম হঠাৎ মনে হল কে যেন আমার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তুু ঘুরে তাকতেই দেখতাম কেউ নেই।  একটা স্টোর রুম ছিল সেটা সবসময় বন্ধ থাকতো। বাড়ীর মালিক যিনি উনি বলেছেন অনেক বছর ধরে এটা বন্ধ করে রাখা এভাবেই।

    কিন্তুু  আমার খালু যখন ওই বাসা ভাড়া নেন সেই সময় ঐ রুম প্রথম বারের মতো খুলে দেন। এর পর থেকে এই রুমটা  মাঝে মধ্যে খুলে রাখেন দিনে। যাতে রুমে আলো বাতাস ডুকতে পারে রুমে কোন দূর্গন্ধ না হয়। আমি ঘুরে ঘুরে বাড়ীর চারপাশটা দেখলাম।  একবার হেঠে হেঠে ওই রুমে ডুকে পরি।

    ঐ রুমে ডুকা মাত্রই আমার গাঁ শিরশির করে উঠলো এবং রুমটা খুবই ঠান্ডা ছিল।  মনে হচ্ছিল এই রুমে কেউ বড় বড় বরফ রাখা বা এই রুমে এসি লাগানো।

    এরকম ঠান্ডা ছিল এই রুম। এই বাড়ীর পাশের বাড়ীর একজন লোক নাকি পাগল ছিলেন। তিনি রাতে হঠাৎ কি যেন দেখেন ভঁয়ে চিৎকার করেন।  এর পর থেকে তিনি আবুল তাবুল শুধু কথা বলতেই থাকেন।

    তাকে হাতে পায়ে শিকল পড়িয়ে রাখা হয়।  আর একটা কথা শুধু উনি বলতেন কেউ বাঁচবে না সব মরবে সব মরবে। তারপর ঐদিন রাতে আবার এক অদ্ভুত রকমের অনুভুতি কাজ করে। মনে হতো সারাক্ষণ আমাদের চারপাশে কেউ আছে।  কেউ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা কি করছি না করছি সেটা দেখছে।

    সেই দিন রাতে রুমের লাইট আর বন্ধ করলাম না সাড়া রাত জ্বালিয়ে রাখি এবং সাথে একটা চার্জার লাইট ও রাখি। যদি হঠাৎ কারেন্ট চলে যায় তাই এগুলো সাথে রাখি।

    আর মোবাইলতো সব সময়ই আমার হাতে রাখি। চার্জার লাইট টা আমাদের দুজনের বাঁলিশের কাছেই রাখি ।

    কারণ প্রথম দিন যে ভঁয় পেয়েছিলাম সেই ভঁয় কাজ করছে আমার ভিতর তাই আমি  নানুর হাতে ধরে ঘুমিয়ে পড়ি।

    আর নানুকে বলি আগামীকাল আমরা চলে যাবো এখান থেকে। চোঁখে ভঁয় নিয়ে এখানে থাকতে চাই না।

    অদ্ভুত ব্যপার সেদিন রাত্রে আর কোনো সমস্যা হয়না।

    আর ভয়ংকর কোনো স্বপ্ন ও দেখিনা। তারপর সকালে খাওয়া দাওয়া করে আমরা খালার বাড়ী থেকে চলে আসি।

    আমাদের বাড়ীতে ফিরে বাড়ীর সবার সাথে এই বিষয়টা শেয়ার করি। এর ঠিক কয়েকদিন পর আবার ও এক অদ্ভুত আরেকটি ঘটনা ঘটে। সেটা শুনে আমি তখন শিওর হয়ে যাই, আমাদের  সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টা তাহলে কোনো স্বপ্ন ছিল না।  আমরা চলে আসার কয়েকদিন পরে খালুর ছোট ভাই ঐ বাসায় বেড়াতে যান ।  তিনি ও আমার মতো পুরো বাড়ী ঘুরেঘুরে দেখেন।

    আমি কখনও ঐ বাসার ছাঁদে উঠিনি ভঁয় করতো কারণ সিঁড়ি পাশটা  ছিল ভীষণ অন্ধকার এবং দেখে মনে হতো ভুতুরে।  তিনি সাহস করে একা একা ছাঁদে উঠেন এবং অনেক্ষণ ছাঁদে থাকার পর নেমে আসেন।

    তিনি দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে ঐ রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

    হঠাৎ উনার মনে হচ্ছিল কে যেন উনাকে ধাক্কা দিচ্ছিল পরে তিনি ও ভাবলেন হয়তো উনার মনের ভুল। রাতে খাবার শেষে যখন ঐ রুমে তিনি শুতে যান। উনার সাথে যে ঘটনা ঘটে সেটা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। তিনি রুমের দড়জাটা লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।  আর রাতের খাওয়া শেষ করে খালু এবং খালা ঘুমিয়ে পড়েন।

    রাত ৩ টার সময় তিনি চিৎকার করে উনার রুম থেকে বের হয়ে খালুদের রুমের দড়জায় ধাক্কা দেন এবং চিৎকার করে কান্না করতে করতে তাদের ডাকছিলেন।  তারা  কান্নার শব্দ শুনে দড়জা খুলে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে কাঁদছিস কেন।  তখন উনার দিকে তাকিয়ে দুজন অবাক হয়ে যান। দেখলেন উনার পুরো দেহে কামড়ের চিহ্ন। কিন্তুু কিসের কামড় কিছুই বুঝা যাচ্ছে না আর রক্তে পুরো শরীর লাল হয়ে আছে। তিনি প্রচন্ড ভঁয় পেয়ে যান।

    পরে খালু ড্রেসিং করে রক্ত বন্ধ করেন। ঐ রাতে কেউ আর ঘুমান না সবাই যেগে রাত কাটিয়ে দেন।

    তারপর সকাল হলে মামা উনাকে নিয়ে সবাই একজন হুজুরের কাছে যান। হুজুর চোখ বন্ধ করেন কিছুক্ষণের জন্য পরে তিনি চোখ খুলেন এবং  মামার দিকে তাকিয়ে বললেন খারাপ কিছু  উনাকে আক্রমণ করে এবং কয়েকজন মিলে কামড়ায়।

    কারণ তারা চায় না তারা ছাড়া আর কেউ এই বাসায় থাকুক। তারা অনেক বছর ধরে তাদের বংশ বিস্তার করেছে এবং তাদের পরিবার বড় হয়ে গেছে। যে এই বাসায় আসতো তাদের ক্ষতি করতো বা ভঁয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিত।  এই বাড়ীটা অনেক বছর ধরে খালি ছিল বাড়ীর মালিক বাড়ী ছেড়ে শহরে চলে যান নিজের বাচ্ছাদের ভাল স্কুলে পড়শুনা করানোর জন্য।

    এরপর থেকে বাড়ী খালি থাকে অনেক বছর।  পরে বাড়ীর মালিক ঐ বাড়ীটা ভাড়া দেন। কিন্তুু  ঐ বাড়ীতে যে সকল নতুন ভারাটিয়া আসতেন কেউ বেশিদিন থাকতেন না বাড়ী ছেড়ে দিতেন। পরে এক ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে তিনি বিষয়টা জানতে পারেন।  পড়ে এই বাড়ীটা বিক্রি করার চেষ্টা করেন কেউ কিনতে রাজি হয়না দেখে এভাবেই ফেল রেখেছেন এবং ভাড়াটিয়াকে কিছু না জানিয়ে তিনি ভাড়া দেন।

    হুজুর বললেন যদি আপনারা ও সেই বাসায় থাকেন তাহলে আপনাদের ও ক্ষতি করবে কারণ তারা এই বাড়ীটাকে নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে এসেছে। পরে হুজুর একটা তাবিজ এবং পানি পড়া দেন।  হুজুরের কথা শুনার পর খালু বলেন এই বাড়ীতে থাকা আর সম্ভব নয়।

    এই জন্যই তো বাড়ীর মালিক আমাকে বলেছিলেন আশে পাশের  লোকের কথায় আপনি কান দিবেন না বলে বাড়ীটি বুঝিয়ে দেন। পরে খালু ঐ দিনই তাড়াহুড়ো করে সেই বাড়ীটি ছেড়ে দেন। এই ছিল আমার ঘটনা।

    বিদ্র: ভূত গল্পের সব কাহিনি সংগৃহীত। বিশ্বাস করা না করা আপনার ব্যপার। তবে  এই গল্পের সাথে যদি কোন জীবিত বা মৃত মানুষ, কোনো স্হান, ধর্ম, কোনো বস্তুু, বা কারো জীবনের সাথে কাকতালীয়ভাবে মিলে যায় তাহলে এই ওয়েব সাইট কতৃপক্ষ দ্বায়ী নহে ।