KiHobe Latest Questions

RJ Emon
  • 0

ভূত গল্প – ৭

  • 0

Leave an answer

You must login to add an answer.

1 Answer

  1. আসসালামু আলাইকুম,

    আমার নাম তাসফিয়া। এই ঘটনা
    আমার এক প্রতিবেশী আন্টির কাছ থেকে শুনা।
    এই ঘটনাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই । আমি যায়গার নামটা উল্লেখ করতে চাচ্ছি না।

    কারণ আমি প্রথমেই বলেছি এটি আমি আমার প্রতিবেশী আন্টির কাছ থেকে শুনা
    তারা অন্য কারো সাথে এই ঘটনাটা শেয়ার করেছেন কিনা আমি জানিনা। তাই আমি যায়গার নামটি প্রকাশ করতে পাচ্ছি না। তার জন্য দুঃখিত।

    সরাসরি ঘটনায় চলে যাচ্ছি।
    পরিক্ষা শেষে আমার কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন ছিল ডিসেম্বর মাস বছরের শেষ মাস। জানুয়ারির প্রথম দিকে আবার কলেজ খুলে যাবে তাই আমরা সবাই মিলে  নানু বাড়ী বেড়াতে যাই।

    আমরা পৌছাতে পৌছাতে তখন বিকেল হয়ে যায়। সেদিন রাতে নানু বাড়ীতে হৈ চৈ গল্প আড্ডা চলছে। সবাই রাত ১০ টায় খাওয়া দাওয়া শেষ করে ড্রইং রুমে বসে গল্প করছেন। কখন যে রাত ২ টা বেজে গেছে সেদিকে কারো খেয়াল ছিলো না।

    পরের দিন আমরা বেড়াতে এসেছি শুনে পাশের বাসার এক আন্টি আমাদের সাথে দেখা করতে আসেন। উনি আমাকে খুব পছন্দ করতেন। আমার কাজিনদের থেকে ও বেশি গল্প করতেন আমার সাথে। আমি উনাকে কখনও পাশের বাসার আন্টি ভাবতাম না। নিজের আপন আন্টি মনে করতাম।

    নানু ও উনাকে খুব পছন্দ করতেন। নিজের মেয়ের মতো ভাবতেন। ভালো কিছু রান্না করলেই আন্টির জন্য পাঠাতেন। আর আন্টি ও নানুকে না দিয়ে কিছু খেতেন না। অল্প কিছু হলেও সেটা না দিয়ে উনি নিজে খেতেন না। কারণ আন্টির বিয়ের পর যখন আমাদের পাশের বাসায় এসেছেন তখন থেকেই উনার সাথে আমাদের পরিচয়।

    আমার মা আন্টিকে আপন বোনের মতো স্নেহ করতেন। আমি নানুর সাথে ঐ আন্টিদের বাসায় যাই। পরে নানু আন্টিকে ডেকে বললেন আজ রাতে তুমরা আমাদের সাথে একসাথে খাবে। আন্টি কখনও নানুর কথা ফেলেন না।

    আমি আন্টিকে বললাম আন্টি সন্ধ্যার পরে চলে আসবেন সবাই মিলে অনেক গল্প করা যাবে। আন্টি বললেন আচ্ছা। কথা মতো আন্টিও সন্ধ্যার পর চলে আসেন। চা খাচ্ছিলাম সবাই একসাথে তখন হঠাৎ আমার ছোটবোন তাসনিয়া বললো আন্টি আমাকে একটা গল্প শুনান না প্লিজ।

    আমার ছোটবোন তাসনিয়া ক্লাস নাইনে পড়ে।
    আন্টি বললেন আচ্ছা শুনাচ্ছি তবে সেটা কোনো গল্প নয় বাস্তব ঘটনা। আমাদের গ্রামের একজনের সাথে সেই ঘটনা ঘটেছে। তখন আমি ছোট ছিলাম এটা আমার দাদির কাছ থেকে শুনা ঘটনা।

    বর্ষা মৌসুমে আমাদের গ্রামের নদী সম্পূর্ণ ভরে তখন পানি ফসলের মাঠে পৌছে যেত। তাই পানি হওয়ার আগেই সবাই ধান কেঁটে ফেলতেন। তখন বৃষ্টির পানি এবং নদীর পানি এক হয়ে ভরে যায় চারপাশ। যেই মেয়েটির সাথে এই ঘটনা ঘটে তার নাম জয়নব বেগম। সে ছিল খুবই সুন্দরী মেয়ে ।

    তার ঘন কালো অনেক লম্বা চুল ছিল। এ গ্রামে আর এরকম কারো চুল নেই। চুলগুলো তার ছাড়া থাকতো সব সময় । জয়নব সহ গ্রামের ছেলে মেয়েরা একসাথে খেলা করছিল তাদের বাড়ীর উঠুনে।

    হঠাৎ তাদের এক সহপাঠী এসে খবর দিল নদীর পানি তাদের গ্রামের ক্ষেতে ডুকে গেছে। তখন বৃষ্টি নামে সবাই খেলা বাদ দিয়ে দৌড়ে যায় এবং বৃষ্টির পানিতে আনন্দ করতে থাকে।

    তখন জয়নবের এক বান্ধবি বলে পানি অনেকটা বেড়ে গেছে চল ফিরে যাই আর সাঁতার কাটার প্রয়োজন নেই। জয়নব বলে ধুর আরেকটু সাঁতার কেটে নেই পরে যাবো।

    পরে সবাই যার যার বাড়ীতে চলে গেল। বিকেল পেড়িয়ে যখন সন্ধ্যা নামে তখন জয়নবকে খোঁজা শুরু হয়। একে একে তার সব বন্ধুদের বাড়ীতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেও তার খোঁজ মিললো না। তখন জয়নবের বাবা শেফালিদের বাড়ীতে যান।

    তার বাবা মা কে জিজ্ঞেস করেন। পাশের ঘরে শেফালি পড়ছিল বসে, তখন জয়নবের বাবার গলা শুনে সে আসে। তাদের বাড়ীতে ও আসেনি শুনে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন জয়নবের বাবা। তখন শেফালি বলে, চাঁচা দাড়ান।

    জয়নব বাড়ী ফেরে নি ? জয়নবের বাবা বললেন না মা। তখন শেফালি বললো পানি বাড়ছে দেখে ভঁয়ে আমরা সবাই সাঁতার না কেঁটে ওঠে আসি। তখন জয়নবকে ও ডাকি সে বললো আরেকটু সাঁতার কেঁটে বাড়ীতে যাবো তুমরা যাও ।

    পরে আমরা চলে আসি। শেফালির বাবা রেগে মেয়েকে মারতে যান এই কথা কেন আগে বলিস নি। পরে জয়নবের বাবা তাকে আটকান। পরে সবাই মিলে গ্রামের নদীর পাড়ে যান। সবাই মিলে তাকে খুঁজেন।

    ঐদিন রাতে জয়নবের বাবা স্বপ্নে দেখেন তার মেয়ে জীবিত আছে। চোঁখ বন্ধ করে সে শুঁয়ে আছে পানির নিচে। এবং কালো ঝাঁপসা কে একজন তাকে বলছে তুমাকে অনেক ধন সম্পত্তি, সোনা দানা দিবো। তুমার মেয়েকে দিয়ে দাও তুমি যা চাইবে আমি তা দিব।

    জয়নবের বাবা বলেন আমার মেয়েকে চাই কিছু লাগবে না। তখন জয়নবের বাবার ঘুম ভেঁঙ্গে যায়।
    পরের দিন কয়েকজন জেলেরা খুঁজে দেখেন সাথে গ্রামের কিছু ছেলেরাও খুঁজে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি।

    তখন জয়নবের বাবা এক হুজুরের কাছে গেলেন।
    হুজুর সব কিছু দেখে বললেন মেয়েটা এখনও জীবিত আছে তাকে দেঔ পানির নিচে আটকে রেখেছে। তিনি তখন উনার শক্তির মাধ্যমে দেঔকে ডাকালেন এবং বললেন মেয়েটাকে ছেড়ে দিতে।
    তখন ওই দেঔ বললো ঐ মেয়েকে সে বিয়ে করতে চায় সে ছাড়া আর কেউ তাকে বিয়ে করতে পারবে না।

    ফিরিয়ে দিবে ২ টা শর্তে রাজি হলে।

    হুজুর জয়নবের বাবাকে বললেন সেই শর্তের কথা।
    তিনি রাজি না হওয়া ছাড়া আর কোনো উপয় ছিলো না। এক দামে কিনে দিতে হবে বড় এবং সম্পূর্ণ কালো একটা ষাঁড়। এবং তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে এবং মাথায় সিদুঁর লাগিয়ে পানিতে ছেড়ে দিতে হবে । এবং সেখান থেকে পিছনে না থাকিয়ে বাড়ীতে চলে যেতে হবে।

    জয়নব নিজে থেকেই বাড়ী ফিরে আসবে।
    আর দ্বিতীয় শর্ত ছিল মেয়েকে কখনও বিঁয়ে দিতে পারবেন না যদি বিঁয়ে দেন তাহলে সে মেয়ের স্বামী মারা যাবে।

    সে বিধবা হয়ে যাবে বিয়ের রাতেই। কারণ সে জয়নবকে বিয়ে করে ফেলেছে। পরের দিন কথা মত জয়নবের বাবা এক লোকের কাছ থেকে এক দামে একটি ষাঁড় কিনে আনেন ষাঁড়কে সাজানো হয়।

    অনেক ধাক্কা ধাক্কি করে ও ষাঁড়টাকে পানিতে নামানো যায়নি। পরে জয়নবের বাবা তাকিয়ে দেখলেন কঁপালে সিদুঁর লাগানো হয়নি। তিনি তা লাগিয়ে দিলেন এবং সাথে সাথে ষাঁড়টি নিজে থেকেই পানিতে নেমে তলিয়ে গেল।

    কথা মত তিনি আর ঐ দিকে না তাকিয়ে বাড়িতে চলে আসেন। জয়নবের পরিবারের সবাই রাতে অপেক্ষা করছেন কখন ফিরবে তাদের মেয়ে। হঠাৎ সে একা একা হেঁঠে বাড়িতে আসে এবং তার পুরো শরীর পানিতে ভেঁজা।

    সবাই খুশি হয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলেন।
    তার মা তাকে কাঁপড় বদল করে শুক্ন কাঁপড় পড়িয়ে দেন। পরে তিনি জয়নবের সাথে শুলেন একই বিছানায় ঐ দিন আবার রাতে স্বপ্ন দেখলেন জয়নবের মা তাকে কে যেন বলছে। আজ থেকে জয়নব একা একটি খাটে শুবে। তার জন্য আলাদা একটি বিছানার ব্যবস্থা করা হয় আর  তার সাথে কেউ যেন না শুয়।

    জয়নব বড় হয়ওয়ার পর তার মা বাবা তাকে বিয়ে দেননি। আন্টি বললেন বৃদ্ধ জয়নবকে বেগমকে আমি দেখেছিলাম তাই কথাটা বিশ্বাস করেছি, প্রথমে শুনার পর বিশ্বাস হয়নি।

    আন্টির কাছ থেকে এই ঘটনা শুনে আমরা সবাই অবাক হই সেটা ছিল অবাক করার মতো। পানির নিচ থেকে একদিন পরে জীবিত ফিরে আসা বিষয়টি আসলেই অবাক হওয়ার মতো ঘটনা।

    এই ছিল আন্টির কাছ থেকে শুনা জয়নব বেগমের ঘটনা। ঘটনাটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে পড়ে শুনাবেন ।