KiHobe Latest Questions

Tanni Noor
  • 0

মানিকজোড় পর্ব ১

  • 0

Leave an answer

You must login to add an answer.

1 Answer

  1. আলো ও রিদিতা দুই বান্ধবী ,দুটি দেহে একটি প্রাণ। হৃদিতা ও আলোর বন্ধুত্বের সূচনা ঘটে ওরা যখন ক্লাস এইটে পড়ে। হৃদিতা গ্রামের মেয়ে, শহরে নতুন নতুন এসেছে। তার পিসিমণি হৃদিতাকে শহরের একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন।

    যখন সে নতুন স্কুলে ভর্তি হল সে ক্লাসের অন্যান্যদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না, এটাই স্বাভাবিক গ্রাম থেকে যখন কেউ নতুন নতুন শহরে আসে তখন নিজেকে শহরের করে উঠানো কিছুটা সময়সাপেক্ষ। হৃদিতা তাদের মতোই একজন।

    একদিন হৃদিতা একা একা বসে আছে তখন আলো সেটি দেখতে পেল, তারপর সে এসে হৃদির সাথে পরিচিত হলো,তার সাথে কথা বলতে বলতে সেই কথাবলা থেকে তাদের বন্ধুত্বের শুরু। তারপর তারা একসাথে ক্লাসে বসা,টিফিন করা, এমনকি স্কুলের ছুটি শেষে একসাথে বাসায় ফিরতো।

    হৃদি থাকতো তার পিসিমনির কাছে,চাকুরির সুবাদে তিনি চট্টগ্রাম থাকেন। উনার কোন সন্তান না থাকার কারণে হৃদিকে উনার কাছে নিয়ে এসেছেন। দেখতে দেখতে তাদের বন্ধুত্বের দুই বছর হয়ে গেল, শুরু হয়ে গেল এসএসসি পরীক্ষা দুজনে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেল পরীক্ষা শেষে হৃদি কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যায়।

    পরীক্ষার ফলাফল বের হলো রিদি জিপিএ ফাইভ পেয়ে উত্তীর্ণ হলো আলো পেলে জিপিএ ৪.৮৮। তারপর তারা ঠিক করল তারা একই কলেজে ভর্তি হবে, যেই কথা সেই কাজ শুরু হলো কলেজের নতুন জীবন।

    কলেজে যাওয়া, ফুচকা-চটপটি খাওয়া টিউশনি পড়তে যাওয়া স্যারের বাসায় সবকিছু শেষ করে একসাথে বাসায় ফেরা, এটাই ছিল তাদের কলেজের নিত্যদিনের রুটিন। কলেজের প্রথম বর্ষের পহেলা বৈশাখে ওরা ঠিক করল ঘুরতে বের হবে এটি তাদের প্রথম বৈশাখে বের হওয়া ।

    সেজন্য দুজনই খুব উদ্দীপিত ,সেজন্য তারা লাল পাড়ের শাড়ি, সাথে মাটির গহনা ও খোঁপার জন্যে গাঁদা, গোলাপ ফুল কিনে নিল। পহেলা বৈশাখে দুজনেই সাজগোজ করে বেরোলো , মেলায় ঘুরল খাওয়া-দাওয়া করলো অন্যরকম একটি দিন কেটে গেল তাদের ।সত্যি কারের বন্ধুত্বটা যে কি হৃদি আর আলোর বন্ধুত্ব দেখলেই আমরা সেটা বুঝতে পারি।

    দেখতে দেখতে ওদের জীবনটা শেষ হয়ে গেল এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল ,দুজনেই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল, দুজনেরই লক্ষ্য ওরা যেন এক ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারে ।তারা চায় না তাদের বন্ধুত্বটা দূরত্বের জন্য নষ্ট হয়ে যাক ভালোভাবে পরীক্ষা শুরু হলো তাদের কিন্তু হঠাৎ করে কেমন যেন সবকিছু বদলে গেল হৃদি চারটি পরীক্ষা দেওয়ার পর আর পরীক্ষা দিতে পারলো না

    । হঠাৎ করে সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো। এমন একটি রোগ যা কখনো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সে প্রায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললো, তখন পর্যন্ত আলো জানে না যে রিদিতা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে‌। রিদিতা তার কোলে একটি পুতুল নিয়ে সারাদিন খেলত আর পুতুলটাকে নিজের বাচ্চা মনে করতো।

    এদিকে হৃদিতার পরিবার আলোকে তার পাগলামির কথা জানালো না কারণ তারা জানে আলো, রিদিতা দুটি দেহ এক প্রাণ ।পরীক্ষা থাকার কারণে আলো হৃদির বাসায় আসতে পারলো না। হৃদি শুধু জানতো আলো অসুস্থ।