চাঁদ ঘাটের মাঝির প্রেমের শেষ পরিনতি কি ছিল ? পর্ব -১
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
চাঁদ ঘাটের মাঝি
চাঁদ ঘাট,,এটা চাঁদের কোন জায়গা বা অংশের নাম নয়। হ্যাঁ, তবে এটা একটা নদীর ঘাট।দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম শিমুলতলা। সেই গ্রামে বয়ে চলেছে একটি নদী। শিমুলতলা গ্রামের নদীর যে ঘাট, সেই ঘাটেরই নাম হচ্ছে চাঁদঘাট।
সে ঘাটেরই মাঝি বকুল। তিন পুরুষ ধরে তারা এই নদীর মাঝি গিরিই করে চলছে ।তাই গ্রামের সবাই তাকে চিনে,এবং অনেক ভালোবাসে তাকে।ঘাটের মানুষ পারাপার করেই তাদের তিনজনম চলে গেছে।বকুলের মা-বাবা কেউ নেই শুধুমাত্র তার এক ছোট ভাই, আর সে। বকুল মাঝি ছিল খুবই শান্ত স্বভাব আর সৎ ব্যক্তি। তার মনে কোন ধরনের হিংসা বিদ্বেষ বা খারাপ কোন চিন্তাধারা ছিলনা। বকুল মাঝি হলেও দেখতে শুনতে খুবই সুদর্শন ছিল।বয়স আনুমানিক ২৮-২৯ হবে।
সেই গ্রামের চেয়ারম্যান করিম মুন্সী,খুবি বদমেজাজি অহংকারী আর প্রতাপশালীও ছিলেন।তিন চার গ্রামের মানুষ তার নাম শুনলেই কাপতো। তার একমাত্র মেয়ে ঝিনুক।চেয়ারম্যানের খুবই আদরের মেয়ে ছিল।ঝিনুক কলেজে যখন যেত, তখন চাঁদ ঘাটের খেয়া পার হয়েই কলেজে যাওয়া লাগত।কলেজে যাওয়ার সময় বকুলের সাথে ঝিনুকের প্রায় দেখা।এভাবে প্রতিদিন যাওয়া আসার সময় ঝিনুকের সাথে বকুলের দেখা হয় এবং ঝিনুক আস্তে আস্তে বকুলকে পছন্দ করতে শুরু করে। কিন্তু বকুলের মনে ঝিনুককে নিয়ে কোন চিন্তাধারা বা মনে প্রেম ভালোবাসা এসব কিছুই ছিলনা তখন।কিন্তু অন্যদিকে ঝিনুকের প্রেম-ভালোবাসা ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকল।ঝিনুক ভাবছে বকুলকে তার প্রেমের কথা জানাবে! কিন্তু কিভাবে, কোথায়, কখন জানাবে তা ভেবে উঠতে পারছিল না।
দুপুরবেলা বকুলের নৌকোতে তেমন মানুষ থাকে না। খালি নৌকা বা একজন বা দুজনকে নিয়ে খেয়া পার করতে হয় তার।আর ঝিনুক ভাবলো যে দুপুর বেলা যদি একটু লেট করে কলেজ থেকে ফেরে তাহলে,ঘাটে বকুল একা যখন থাকবে তখন তখন নৌকোতে ওঠে তাকে নৌকো ছাড়তে বলবে।
তার পরদিন ঝুমুর ঠিক সেই কাজটি করলো। সে নৌকোতে উঠে বকুলকে তাড়াতাড়ি করে নৌকা ছাড়তে বলল, বকুল বলল যে আরো দু একজন মানুষ আসুক,ঝুমুর মানলো না। সে বলল সে দরকার হয় সে দশজনের টাকা দিবে তারপরও যেন সে নৌকা ছাড়ে।বকুল ও তখন কিছু বুঝলো না সে নরমালি নৌকা ছাড়লো।নৌকা যখন ঠিক মাঝ নদীতে তখন ঝুমুর বকুলকে তার মনের সব কথা খুলে বলল।বকুল ঝুমুরের কোন কথা বুঝে উঠার আগেই, ঝুমুর বললো যে সে যদি বকুলকে এ জীবনের না পায় তাহলে এই নদীতেই ঝাঁপ দিয়ে সে তার জীবননাশ করবে। তখন বকুল তাড়াহুড়া কোন কিছু ভেবে না পেয়ে, অন্য দিকে ঝুমুর কে বাঁচাবে বলে, বলল যে ঠিক আছে।কিন্তু বকুল তার মন থেকে কোনকিছুই যেন বুঝে উঠতে পারছিল না।সে যা কোনদিন চিন্তাও করেনি আজ সেই ঘটনা ঘটলো।এভাবে ঝুমুর প্রায় সময়ই বকুলের সাথে পাগলামি করতো এবং কলেজ থেকে ফেরার পথে যখনই বকুল একা ঘাটে থাকতো তখন ঝুমুর নৌকাতে করে নৌকা পার হত।এভাবে প্রথমদিকে বকুল বিরক্ত হলেও আস্তে আস্তে সে ঝুমুরের মায়ায় পড়ে যায়।সেও ঝুমুর কে ভালবাসতে শুরু করে।তারা ভালোবাসায় এতটাই মত্ত ছিল যে তারা ভুলে গিয়েছিল যে তাদের কার অবস্তা কি, এবং তাদের ভবিষ্যৎ কি হতে পারে। কিন্তু তারা একে অপরকে খুব বেশী ভালোবাসতো এবং এমনকি তাদের জীবনের চেয়েও বেশি। তাদের কথা হচ্ছে, বাঁচলে একসাথে বাঁচা নয়তো মরলে একসাথে মরা।
কিছুদিন পর, ঝুমুরের বাবা গ্রামের কয়েকটি ছেলের মাধ্যমে সব ঘটনা জানতে পারে। তখন ঝুমুরের বাবা বকুলকে গুন্ডা দিয়ে প্রচুর মারধর করে।এবং ঝুমুরের বিয়ের জন্য পাত্র দেখাও শুরু করে।বকুলকে ঝুমুরের বাবা এত বেশি মার মেরেছিল যে সে বাড়িতে অসুস্থ কিন্তু তাকে দেখার মত তার ছোট ভাই ছাড়া আর কেউ নেই।ছোট ভাই সেবা-শুশ্রূষা করে আস্তে আস্তে বকুলকে সুস্থ করতে লাগল।অনেক কষ্টে ঝুমুর মাঝে মাঝে পালিয়ে এসে বকুলকে দেখে যেতো।এভাবে আস্তে আস্তে বকুলও কিছুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে গেল। কিন্তু ঝুমুরের বাবা এ ঘটনা ও জেনে গেলেন। অন্যদিকে ঝুমুরের বিয়ের পাত্র ঠিক এবং বিয়ের দিন তারিখ পড়ে ও গেছে।বিয়ের তিন চার দিন আগে রাতে ঝুমুরের বাবা কার সাথে যেন আলাপ করছেন, তিনি চাচ্ছিলেন যে ঝুমুরের বিয়ের আগেই বকুলকে একেবারে মেরে ফেলতে।সেই প্ল্যানের কথা ঝুমুর আড়াল থেকে শুনে ফেলে।ওই দিন মাঝরাতেই বাড়ির সব ঘুমানোর পর সে বকুলের বাড়িতে যায় এবং বকুলকে সব খুলে বলে এবং ঝুমুর বকুল কে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করে।বকুল ও না করলো না, কেননা এখানে থাকলে তাকে খুন হতে হবে, আর সে মরলে ঝুমুর মারা যাবে, তার ছোট ভাইয়ের দেখার কেউ নাই।তাই আর দেরি না করে বকুল, ঝুমুর এবং বকুলের ছোট ভাই তারা বেরিয়ে পড়ল, চাঁদ ঘাঠের দিকে
চলমান……..
পর্ব ২ পড়ুন