অবাক আজব ভালোবাসা
Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.
Please briefly explain why you feel this question should be reported.
Please briefly explain why you feel this answer should be reported.
Please briefly explain why you feel this user should be reported.
অবাক ভালোবাসা
প্রতি দিন ঘুম থেকে দেড়িতে উঠার অব্যাস আমার ।একটা পুরোনো স্বৃতি মনে পরে গেল সকালে ।আমি ঘুম থেকে ওঠে রোজকার মতো সময় মতো ক্লাসে পৌছাতে পারতাম না,যখনই ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতামদেখতাম পাঁচ বা দশ মিনিট লেইট। ভার্সিটি থেকে বাসায় ফেরার পথে লক্ষ্য করতাম রোজ একই সময় একটা মেঁয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতো।এবং পায়চারি করতো আর পাখির সাথে খেলা করতো এবং রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতো।যখনই আমি রিক্সায় করে ওর বাসার সামনে দিয়ে যেতাম তখন সে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো ।
একদিন আমি বিষয়টি খেয়াল করলাম,মেয়েটির দিকে ভালো করে খেয়াল করলাম।মেয়েটি ছিল খুবই সুন্দর এবং লাজুক প্রকৃতির । ওর টোঠের নিচে বেশ সুন্দর একটি তিল ছিল, সেটা আমার খুব ভালো লেগেছিল মনে হচ্ছিল সেটা আমার মনে আটকে গেছে । আমি হা করে থাকিয়ে থাকি ।পরে মেয়েটি লজ্বা পেয়ে মুঁচকি হাঁসি দিয়ে ভিতরে চলে যেতো।একদিন আমি বৃষ্টিতে ভিজে কাক হয়ে বাসায় ফিরি।তখন হঠাৎ খেয়াল করলামমেয়েটিকে আর বারান্দায় দেখতে পেলাম না।তার পর বেঁশ কয়েকদিন ধরেআমি লক্ষ্য করলাম আর আসেনা ওই মেয়েটি বারান্দায়।
আমি একদিন চলে গেলাম তাদের বাসায় খুঁজ নিতে।সেই মেয়েটির কি হলো হঠাৎতারপর তাদের বাসার দড়জায় কলিংবেল দিলে,একজন ভদ্রলোক বের হোন।সম্ভবত ওই মেয়েটির বাবাআমি উনাকে সালাম দিয়েজানতে চাইলাম যে বারান্দায় রোজ দাড়িয়ে থাকতো সেই মেয়েটি কে ?তিনি বললেন উনার একমাত্র মেয়ে ।তারপর তিনি যখন বললেন কথা অসুস্থ আর সে বাকপ্রতিবন্ধী,সে জন্মের পরেই হঠাৎ একটা একসিডেন্টে এরকম হয়।অনেক ডাক্তার ও দেখিয়েছি,কিছুই হয়নি।তারপর ওর নাম রাখি কথা। আমি এই কথাটা শুনে চমকে যাই।ওহ বলাই হয়নি ঐই মেয়েটির নাম ছিল কথা ।যেদিন আমি বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় ফিরি সেদিন নাকি সে ও বাসার ছাঁদে বৃষ্টিতে ভিজেতারপর থেকে ওর ভীষণ জ্বর আসে।কথার বেডরুমে যখন গেলাম সে আমাকে দেখে হাঁসি দিলো এবং ওঠে বসলো, ইশারায় জানতে চাইলো কেমন আছি ?ওর বাবা অবাক হয়ে গেলেন যে মেয়েটি এতোদিন ধরে বিছানায় শুয়ে, সে আজ হঠাৎ উঠে বসলো ।
পরে একদিন এসে আমি কথাকে আমাদের বাসায় বােড়াতে নিয়ে গেলাম।আমার মায়ের বিষণ পছন্দ হলো কথাকে ।তিনি কথার বাবার সাথে আলাপ করে আমার এবং কথার বিয়ে ঠিক করেন।আমার অজান্তেই ।পরে আমি জানতে পারি ।তারপর আমাদের বিয়ে হয়ে গেল ।বিয়ের দিন আমি যখন আমার রুমে যাই কথা আমাকে সালাম করে।আমাকে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করতেই আমি অবাক হয়ে যাই,যে কথা কথাই বলতে পারতো না তার মুখ দিয়ে আজ কথা বের হচ্ছে ।পড়ে তার মুখ থেকে বিস্তারিত শুনলাম যখন আমাদের বিয়ের প্রস্তুাব দেওয়া হয় সেই খুশিতে হঠাৎ নাকি ওর মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হয়ে যায় ।কথার বাবা বিষয়টি আমাকে জানাতে চাইলে সে নাকি বাধা দেয়।এটা আমাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে ।তাই তার বাবা ও কিছু বলেননি।
আমার মা ওকে খুব পছন্দ করেন।তাই কথাকে তিনি মা বলে ডাকেন।কথা ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে মাকে সাহায্য করবে বলে রান্নাঘরে চলে যায়।আর রান্নাঘরে গিয়ে বললোমা আমি কি রান্নার কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারি ?না মা তুমি এতো সকালে এখানে কেনো আসলে ?আজ তুমার এই বাড়িতে প্রথম দিন ।তুমি বরং মিলনকে ডেকে দাও আর তোমরা একসাথে নাস্তার টেবিলে আসো,আমি তোমাদের জন্য নাস্তা বানিয়ে আনছি ।
কথা আমাদের রুমে এসে পানি ছিটিয়ে আমার ঘুম ভাঙ্গায়,এই যে ঘুমের রাজা ঘুম থেকে ওঠে পড়ুন অনেক বেলা হয়েছে।আর আপনি সময় মতো না ওঠলে এখন থেকে রোজ ঠিক এভাবেই ঘুম ভাঙ্গাবো।কথা আমার কাছে এসে বসে আর বলে আপনি একজন খুব ভালো মানুষ না হলে আপনি যেনে শুনে বাকপ্রতিবন্ধী একটা মেয়েকে বিয়ে করতেন না ।এই কথা শুনে আমি হেঁসে ওঠি।আরো বলেবিয়ে যখন করেছেন এখন থেকে বউয়ের সব কথা তো শুনতে হবে।আমাকে মাঝেমধ্যে বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে।কারণ আমি তেমন একটা বাহিরে যেতাম না গেলেও বাবা মার সাথে যেতাম।আমি বললাম রাজি আছি ম্যাডাম ।এরপর আমাদের সংসার সুখের হয়ে ওঠে । কথার ভালোবাসাগুলো আমাকে অবাক করে দেয়।ভালোবাসায় পূর্ণতায় ভরে ওঠে আমাদের জীবন ।