KiHobe Latest Questions

Tanni Noor
  • 0

সর্পরাজ‍্য; ইলহাডা কুইমাডা গ্রান্ডদে ,দ্বীপ | আজব গুজব

  • 0
সর্পরাজ‍্য; ইলহাডা কুইমাডা গ্রান্ডদে ,দ্বীপ | আজব গুজব

Leave an answer

You must login to add an answer.

1 Answer

  1. ” সর্পরাজ‍্য; ইলহাডা কুইমাডা গ্রান্ডদে ,দ্বীপ”

    আপনাদের অনেকেরই হয়তো নতুন নতুন জায়গাতে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাস আছে। আমরা অধিকাংশ মানুষই বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরে বেড়াতে বেশি পছন্দ করি তাই নয় কি? আচ্ছা আপনাদের যদি এমন একটা দ্বীপের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই যেখানে রয়েছে সবুজের অবয়ারন্য, আমরা যে কেউ এক পলকেই রাজী হয়ে যাব সেখানে যাওয়ার জন্য ।কিন্তু যদি বলি যে, সেটি হচ্ছে সাপের দ্বীপ তাহলে কি আর যাওয়ার বাসনা মনে জাগবে আপনাদের?” হ্যাঁ” আমি বলছি ব্রাজিলের “ইলাহাডা কুইমাডা গ্রান্ডদে” দ্বীপের কথা যেটা কিনা “সর্প রাজ‍্য ” নামে পরিচিত।
    আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপ ঘেঁষেশে ব্রাজিলের সাও পাওলো সমুদ্র সৈকত থেকে প্রায় ৯০ মাইল দূরে প্রায় 20 মাইল দীর্ঘ এই দ্বীপটি। এটির পুরোটা জুড়ে রয়েছে সবুজে ঘেরা মনোরম বনাঞ্চল যেটা দেখলে যে কোন ভ্রমণবিলাসী মানুষের চোখ আটকে যাবে আর মাঝে মাঝে পাওয়া যায় পাথর দ্বারা আবৃত শুষ্ক মাটি। সেখানে রয়েছে একটি বাতিঘর, যেটিনির্মাণ করা হয়েছিল জাহাজ পরিচালনার জন্য।বাতিঘর দেখার জন্য একজন প্রহরী তার পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। তিনি ও রক্ষা পাননি বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে। তবে এই দ্বীপের একটাই পরিচয় এটি ভয়ঙ্কর ও বিপদজনক সব সাপের আশ্রয়স্থল। তবে ব্রাজিলের পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য যতগুলো সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে তাদের মধ্যে এই দ্বীপটি অন্যতম। প্রত্যেক ব্রাজিলিয়ান এই দ্বীপ সম্পর্কে কমবেশি ধারণা রাখেন। তবে ভ্রমন বিলাসীরা কেউই এই দ্বীপ ঘুরে বেড়ানোর সাহস দেখায় না।
    আপনারা নিশ্চয়ই “বোতরোপস ইন্সুলারিস প্রজাতির সাপের কথা শুনেছেন যেটি কিনা বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ এটি এই দ্বীপে বসবাস করে। এটাকে আমরা গোল্ডেন গ্ল্যান্ড নামে ডেকে থাকি। এ প্রজাতির ছাড়াও ডিফেন্স নামক আরেক প্রজাতির বিষাক্ত সাপ রয়েছে এই দ্বীপে। তবে মজার ব্যাপার হলো এই দ্বীপে কোন মানবজাতির বসবাস নেই যেটি কিনা পুরো পুরো বিশ্বে বিরল ই ধরা যায়।
    সাধারণ বিষধর সাপের থেকে এই সাপ কয়েকগুণ বেশি বিষধর হয়ে থাকে। এই প্রজাতির সাপগুলো দেখতে উজ্জ্বল হলুদাভ বাদামি বর্ণের। এগুলো গড়ে ২৮ ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ ৪৬ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদের মাথা অন্যান্য সাধারণ সাপের তুলনায় বেশ তীক্ষ্ণ হয়ে থাকে। খাদ্যের কথা বলতে গেলে এসব সাপ আকাশে উড়ন্ত পাখিকেও মূহুর্তেই ছো মেড়ে কাবু করে নিজের খাবার হিসেবে গ্রহণ করে ৷ এছাড়া টিকটিকি এবং অন্যান্য সাপও থাকে এদের প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায়। এদের বিষ এতই ভয়ানক যে, এই বিষ দিয়ে মুহুর্তেই মানুষের মাংসকে গলিয়ে ফেলা সম্ভব৷ সাধারণত এই সাপের বিষ মানুষের শরীরে প্রবেশ করার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই মানুষটি মারা যায়। তাই সব কিছু বিবেচনা করে এই দ্বীপটিকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করেনি ব্রাজিল সরকার।
    জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত না হলেও অনেক বিখ্যাত মানুষ এই স্নেক আইল্যান্ডে ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং সেখানকার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। এই দ্বীপটি দূর থেকে অসম্ভব মনোরম দেখায় কিন্তু ভয়ংকর সাপের উপস্থিতি বিপজ্জনক হবার আশঙ্কায় জনসাধারণ প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেকোনো সাপের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী সাপের উপস্থিতির কারণেই পর্যটকেরা সেখানে যাওয়ার সাহস করে না। এখানকার সাপগুলো শিকারের মাংস পেঁচিয়ে অতিদ্রুত হত্যা করে ফেলতে সক্ষম। দ্বীপে এগুলোর ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি অর্থাৎ প্রতি বর্গমিটারে কয়েকস্তরে এক থেকে পাঁচটি সাপ রয়েছে। এ দ্বীপে রয়েছে লক্ষাধিক সাপের অবস্থান ও আশ্রয়স্থল।
    এই দ্বীপে প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার সংখ্যক সাপ আছে যদিও বর্তমানে এই সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছে। এই সাপগুলোর বিষ অত্যন্ত মূল্যবান, কালোবাজারে প্রতি একশ গ্রাম বিষের দাম সাড়ে ১৭ হাজার ডলার যেটি আমাদের দেশীয় টাকায় অনেক লক্ষ টাকা। এই দ্বীপটি জীববিজ্ঞানী এবং গবেষকদের জন্য একটি জীবন্ত পরীক্ষাগার। তারা বোতোরোপস ইনসুলারিস সম্পর্কে অধ্যয়ন করার জন্য দ্বীপ ভ্রমণের বিশেষ অনুমতি পায় নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনী প্রধানের কাছ থেকে। সৌন্দর্যে ভরপুর এবং সাপের রাজত্বে ভরা এই দ্বীপটি নিয়ে দিনে দিনে মানুষের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। আপনার কি যেতে ইচ্ছে করছে এই অদ্ভুত সর্পরাজ্যে?